Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts
Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts

Tuesday, 22 April 2025

পক্ষ ভারি করছে দলগুলো ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে সর্বদলীয় জনমত গঠনে সিরিজ বৈঠকে বিএনপি, সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠক করছে জামায়াত ও এনসিপি।


 আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি। দাবি আদায়ে ‘সর্বদলীয় জনমত’ গঠনের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত দলগুলোর পাশাপাশি ডান, বাম ও ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে দলটি। অন্যদিকে গণ অভুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলছে, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের পর জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। দাবি আদায়ে তারাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী বলছে, নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার দৃশ্যমান ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এসব ছাড়া জনগণ নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি জামায়াতও নিজেদের অবস্থানের ভিত শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে চলেছে। সব মিলিয়ে সুবিধামতো সময়ে নির্বাচনের দাবিতে দেশের প্রধান দলগুলো পক্ষ ভারী করছে।

‘সর্বদলীয় জনমত’ গঠনে সিরিজ বৈঠক করছে বিএনপি : চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আদায়ে সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠন করতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রবিবার সিপিবি, বাসদসহ বামধারার দলগুলো ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আর আগে শনিবার যুগপতের অন্যতম শরিক ১২-দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। গতকাল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এর বাইরে ইসলামপন্থি ও তরিকতপন্থি কয়েকটি দলের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে বিএনপির সিনিয়র নেতারা যোগাযোগ রাখছেন। এর মধ্যে একটি দলের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও তাঁর দলের নেতারা নির্বাচন সামনে রেখে একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনে কাজ করছেন। বিএনপির সঙ্গে তাঁদের নির্বাচনি সমঝোতা হতে পারে। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারাই রাজপথে ছিলেন, আমরা সবার সঙ্গে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এ আলোচনা শেষে কী করা যায় বা কী করা যায় না তা দেশবাসীকে জানানো হবে। আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চায় বিএনপি।

Tuesday, 7 January 2025

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা, জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপির নির্দেশনা


 উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার লন্ডন যাচ্ছেন। তাকে বিদায় জানানোর সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।মঙ্গলবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৮টায় তাঁর গুলশানের বাসা থেকে হযরত শাহ্‌জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রওয়ানা হবে। রাত ৯টায় তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। রাত ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন।

Tuesday, 31 December 2024

সরকার বা আদালত নিষিদ্ধ না করলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের: সিইসি


 সরকার বা আদালত যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করেন, তাহলে দলটির নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটা মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হবে। এটাও শোনা যাচ্ছে যে কেউ কেউ মামলা করেছে কোর্টে। এ দল যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে, সেটার আদেশ চেয়ে। কোর্ট যদি রায় দেন, যেভাবে রায় দেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেব। আর না হলে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’

‘আওয়ামী লীগ তো আমাদের এখানে একটা রেজিস্টার্ড দল, বিধিবিধান অনুযায়ী। নির্বাচন করা না–করার সিদ্ধান্ত মূলত তাদের।’
এ এম এম নাসির উদ্দীন

এম এম নাসির উদ্দীন আরও বলেন, ‘দল করার শাসনতান্ত্রিক অধিকার সবারই আছে। কোনো দল নিবন্ধন পাবে কি পাবে না, সেটার আলাদা বিধিবিধান আছে। কোনো দল শর্ত পূরণ করলে আমরা দেব। শর্ত পূরণ না করলে দেব না। পুরোনো যে দলের কথা বলছেন, এরা কিন্তু বহু আগে রেজিস্টার্ড।’

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘সুতরাং সরকার যদি কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, আমরা তাদের নিবন্ধন তো বাতিল করতে পারি না। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা কোর্টের সিদ্ধান্ত; এ দুইটার একটা হতে হবে, যেটার ভিত্তিতে হয়তো আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমি একদম গোড়া থেকেই বলে আসছি এটা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা কোর্টের সিদ্ধান্ত। আমরা এ দুটোর দিকে চেয়ে আছি।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো আমাদের এখানে একটা রেজিস্টার্ড দল, বিধিবিধান অনুযায়ী। তাদের নির্বাচন করা না–করার সিদ্ধান্ত মূলত তাদের। তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা নির্বাচন করব না, আমরা তো জোর করে করাতে পারব না।’

সিইসি বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় বা কোর্ট থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে উই আর আনডান। ৭২ সালের পর থেকে তারা রেজিস্টার্ড অবস্থায় আছে। আমরা তো বাদ দিতে পারি না।’

১৭ বছর বয়সীদের ভোটার করার চলমান আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর জন্য সংবিধান আবার সংশোধন করতে হবে। সংবিধানে তো বলা আছে ১৮ বছর। যদি সংবিধান পরিবর্তন করে ১৭ বছর করার সিদ্ধান্ত হয়, আমরা সেভাবে কাজ করব।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা সংবিধান অনুযায়ী চলি। অন্য কারও নির্দেশনায় চলি না। সংবিধানে যদি পরিবর্তন আসে ১৭ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার যোগ্যতা রেখে, তাহলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। ভোটার তালিকা আইনে সংশোধনী আনতে হবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আগের নির্বাচন কমিশনের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিন্তা করছি না। আমাদের এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেই। সংস্কার কমিশন কি সুপারিশ দেয়, দেখে সিদ্ধান্ত জানাব।’ তিনি বলেন, ‘গত তিনটা নির্বাচনের আগের নির্বাচন আপনারা দেখেছেন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮–এর নির্বাচন আপনারা দেখেছেন। গত তিনটা নির্বাচন কেমন হয়েছে, আপনারাও জানেন, আমরাও বুঝি। এখন সেই পরিস্থিতি নেই।’

নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এখানে ডানে–বামে ওপরে–নিচে কোনো চাপ নেই। আমরা শুধু এখন বিবেকের চাপে আছি। আইনকানুন, শাসনতন্ত্র, বিধিবিধানের মধ্যে কাজ করার যে চাপ, সেটুকুর মধ্যে আছি। অন্য কোনো বহিঃশক্তির চাপ আমাদের ওপর নেই। যেটা আগের তিনটা কমিশনের ওপর ছিল। ওই তিনটা নির্বাচন ওই জন্যই হয়েছে। এ দেশে ভালো ইলেকশন করা সম্ভব। অতীতে করেছি আমরা।’

অন্য প্রশ্নের জাবাবে সিইসি বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, অনেক ফেক (ভুয়া) ভোটার আছে এখানে। অনেক বিদেশি ভোটার হয়ে গেছেন এখানে। অনেক ভোটার মারা গেছেন। মৃত ভোটার রয়ে গেছে। কিন্তু নাম কাটা যায়নি। ওটা বাদ দিতে চাই। ইলেকটোরাল প্রসেসের (নির্বাচনী প্রক্রিয়ার) প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। অনেকে মনে করেন, ভোটার হয়ে কী হবে। ভোট তো কেউ না কেউ দিয়ে দেবে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। বাড়ি বাড়ি যাব। টার্গেট হচ্ছে মাস ছয়েকের মধ্যে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কাজ শেষ করব।’

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘এবার আর আগের মতো ভোট হবে না। সেটার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। ’৯১, ’৯৬ ও ২০০১–এর মতো যাতে নির্বাচন করতে পারি।’

সিইসি বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছর রাজনৈতিক দলগুলো যে এত জেল খেটেছে, জান দিয়েছে, কেন? ভোটের অধিকারের কথা বলছে না? আমরা সে কাজটাই করে দেব। রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে থাকার কথা। তারা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের মূল দাবি ছিল ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন। এ ব্যাপারে ৫ আগস্টের পরে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি হয়েছে।’

সংখ্যানুপাতিক ভোটের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমাদের সংবিধানে সংযোজিত হয়নি। সংবিধান সংস্কারসংক্রান্ত যে কমিশন করা হয়েছে, ওনারা কি সাজেশন দেন, আমরা দেখি। ওনাদের সাজেশন যদি অনুমোদিত হয়, সরকার যদি সেভাবে সংবিধান সংশোধনের ব্যবস্থা নেয়, তাহলে আমরা সেভাবে নির্বাচন করব। আর না হলে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে যেভাবে আছে, সেভাবেই করতে হবে।’

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. নোমান হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ প্রমুখ।

Sunday, 29 December 2024

রাজনীতি সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা বললে কষ্ট লাগে: মির্জা আব্বাস


 বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘অনুরোধ করব, বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করবেন। ভুল বুঝবেন না। কবর দিয়ে ফেলব, মেরে ফেলব, কেটে ফেলব—এ সমস্ত কথা ভালো কথা নয়। এ ধরনের কথা ফ্যাসিবাদের মুখ থেকে আসে।’

সংবিধান নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর একটি মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নবনির্বাচিত নেতা, দক্ষিণ বিএনপির সাবেক নেতারা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, আজ রোববার বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’–এর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মতো ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা করার কথা বলেছেন সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। একই সঙ্গে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী’ সংবিধান হিসেবে তুলে ধরে তার ‘কবর’ রচনা করারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বিএনপির অনুষ্ঠানে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখভাগে থেকে অংশগ্রহণ করেছি। ১৯৭১ সালে আমার বহু বন্ধু শহীদ হয়েছে। শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা তোমাদের অগ্রজ হিসেবে কষ্ট পাই। কথাটা এভাবে বলা কি ঠিক হলো! ওই সংবিধানে যদি খারাপ কিছু থাকে, নিশ্চয়ই সেটা বাতিলযোগ্য।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এ ধরনের কথা ফ্যাসিবাদের মুখ থেকে আসে। কবর দিয়ে ফেলব, মেরে ফেলব, কেটে ফেলব, এ সমস্ত কথা ভালো কথা নয়। জাতি তাকিয়ে আছে আপনাদের দিকে। আমরাও তাকিয়ে আছি আপনাদের দিকে। আপনাদের মুখ থেকে এই ধরনের কথা আমরা আশা করি না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যারা ৫ আগস্টের আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ হিসেবে কাজ করেছে, এককভাবে তারা এই আন্দোলনকে নিজেদের করে নিতে চায়। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন প্রায় নিভু নিভু, তখন কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামনে এগিয়ে আসে। সাধারণ মানুষ সামনে এগিয়ে আসে। আমরা এগিয়ে যাই। বিএনপির ৪৬২ জন মারা গেছে। নিশ্চয়ই নেতৃত্বে একজন থাকবে। পেছনে হাজারো জন থাকবে। কিন্তু এককভাবে দাবি করা ঠিক না। এতে কিন্তু জনমনে বিভেদ সৃষ্টি হবে; বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে।’


Saturday, 28 December 2024

জাতীয় সংলাপ জাতীয় নিরাপত্তা নীতি তৈরিতে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐকমত্য







 
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর
ছবি: আশরাফুল আলম

বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো নীতি বা কাঠামো প্রণয়ন করা হয়নি। গত পাঁচ দশকের বেশি সময়ে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা যেটা ভালো মনে করেছে, সেটা করেছে। ৫ আগস্টের পর এখন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব রাজনৈতিক দলকে যুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তাকাঠামো প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক সংলাপে রাজনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এই অভিমত দেন। ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক এই জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস)। দুই দিনব্যাপী সংলাপের শেষ দিনে শেষ অধিবেশনে ‘ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গত ১৫ বছরের পররাষ্ট্রনীতি ছিল গদি রক্ষার নীতি। এখানে কোনো পররাষ্ট্রনীতি, দেশের স্বার্থ ছিল না। সম্পূর্ণ অর্থে একটা সরকার গদি রক্ষার জন্য বিদেশনীতি সাজিয়েছিল। ফলে দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা নানাভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। বিগত সরকার গদি রক্ষার স্বার্থে অপরাপর শক্তিকে খুশি করেছে। এর মধ্যে ভারত প্রধান জায়গায় দাঁড়িয়েছে। এমনকি মিয়নামারের সঙ্গেও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে, এমন কোনো পররাষ্ট্রনীতি ছিল না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আলোচনায় আমাদের একটা ক্লান্তি চলে এসেছে। এ নিয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকে বাঙালি–পাহাড়ি বিরোধ বা শান্তিচুক্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে। এখানে আরও অনেক ভূরাজনৈতিক দিক রয়েছে, যেগুলো নিয়ে আলোচনা হয় না। যেমন কানেক্টিভিটির নিরাপত্তার বিষয়গুলো আলোচিত হয়নি।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাফকাত মুনিরের সঞ্চালনায় এই আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির, এবি পার্টির যুগ্ম সচিব দিদারুল আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও সহমুখপাত্র তাহসীন রিয়াজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল।

Friday, 27 December 2024

আমরা যেন একাত্তরকে ভুলে না যাই: ফখরুল


 বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা যেন একাত্তরকে ভুলে না যাই। একাত্তরের পর থেকে গণতন্ত্রের জন্য ধারাবাহিক যে লড়াই-সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের প্রত্যেককে আমাদের মনে রাখা দরকার। সেই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে, ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকে আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য কোন পথে’শীর্ষক জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই সংলাপের আজ ছিল প্রথম দিন। এ সংলাপের আয়োজক ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ। আজ সকালে এই সংলাপের উদ্বোধন করা হয়।

সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা অত্যন্ত জটিল রাজনৈতিক সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আজকে যে প্রশ্নগুলো সামনে এসেছে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন। জাতিগতভাবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে আজকে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হচ্ছে। খুব ভালো হতো, যদি আমরা প্রথম থেকেই এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সামনে এগোতে পারতাম।’

বক্তব্যের একপর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খুব জরুরি কথা, আমরা যেন একাত্তরকে ভুলে না যাই। একাত্তর সালকে আমরা কখনো ভুলে না যাই। একাত্তরের পর থেকে গণতন্ত্রের জন্য ধারাবাহিক যে লড়াই-সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের প্রত্যেককে আমাদের মনে রাখা দরকার। সেই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে, ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকে আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সাল থেকে বিএনপি সংগ্রাম শুরু করেছে ও অবস্থান নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘সে সময় আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, অনেক নেতাকে পঙ্গু করা হয়েছে, কারাগারে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দলের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের সাত শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করে দেওয়া হয়েছে। ২০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আয়নাঘরের কথা সবাই জানেন। বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায়ও আমরা কখনো থেমে থাকিনি। আমরা প্রথম থেকেই সোচ্চার থাকার চেষ্টা করেছি, তখন অনেককেই আমরা সঙ্গে পাইনি। এখন আমরা তাঁদের সামনে দেখছি, আমাদের খুব ভালো লাগছে।’

সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিক বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ২০১৬ সালে বিএনপির ভিশন ২০৩০, ২০২২ সালে প্রথমে ১০ দফা ও পরে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের পক্ষে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Wednesday, 25 December 2024

ভারতের অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা উচিত: সিলেটে মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সব সময় সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছি এবং আমরা মনে করি, ভারতের অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা উচিত।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের এখন মুক্তির আবেগ। আমরা একটা ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি। সেই সঙ্গে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছি। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কাজ করছি সব সময়ই।’ মির্জা ফখরুলের সিলেট সফর উপলক্ষে তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে দলের মহাসচিবকে নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.)–এর মাজার জিয়ারত করতে যান নেতা-কর্মীরা।

Tuesday, 24 December 2024

শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা গেলে বিচার ভালোভাবে করা সম্ভব: চিফ প্রসিকিউটর


ভারত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্তর্বর্তী সরকার ফেরত আনতে পারলে বিচার আরও ভালোভাবে করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সোমবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, তাদের (ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর দপ্তর) অনুরোধের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র এই ব্যবস্থা নিয়েছে। তাঁরা চান, সরকার সফল হয়ে তাঁকে যদি দেশে আনতে পারে, তাহলে বিচার আরও ভালোভাবে করা সম্ভব হবে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র–জনতার মধ্যে, সবার মধ্যে আমাদের ব্যাপারে যেন কোনো অনাস্থা তৈরি না হয়। আমরা ব্যাপক হারে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছি না। সেটি না করে আমরা তদন্ত করে যার বিরুদ্ধে কংক্রিট এভিডেন্স (সুস্পষ্ট প্রমাণ) পাচ্ছি, সেগুলোকেই নিয়ে আসছি। কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না, এটাও সত্য।’

Search This Blog

Powered by Blogger.