বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো নীতি বা কাঠামো প্রণয়ন করা হয়নি। গত পাঁচ দশকের বেশি সময়ে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা যেটা ভালো মনে করেছে, সেটা করেছে। ৫ আগস্টের পর এখন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব রাজনৈতিক দলকে যুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তাকাঠামো প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক সংলাপে রাজনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এই অভিমত দেন। ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক এই জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস)। দুই দিনব্যাপী সংলাপের শেষ দিনে শেষ অধিবেশনে ‘ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গত ১৫ বছরের পররাষ্ট্রনীতি ছিল গদি রক্ষার নীতি। এখানে কোনো পররাষ্ট্রনীতি, দেশের স্বার্থ ছিল না। সম্পূর্ণ অর্থে একটা সরকার গদি রক্ষার জন্য বিদেশনীতি সাজিয়েছিল। ফলে দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা নানাভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। বিগত সরকার গদি রক্ষার স্বার্থে অপরাপর শক্তিকে খুশি করেছে। এর মধ্যে ভারত প্রধান জায়গায় দাঁড়িয়েছে। এমনকি মিয়নামারের সঙ্গেও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে, এমন কোনো পররাষ্ট্রনীতি ছিল না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আলোচনায় আমাদের একটা ক্লান্তি চলে এসেছে। এ নিয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকে বাঙালি–পাহাড়ি বিরোধ বা শান্তিচুক্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে। এখানে আরও অনেক ভূরাজনৈতিক দিক রয়েছে, যেগুলো নিয়ে আলোচনা হয় না। যেমন কানেক্টিভিটির নিরাপত্তার বিষয়গুলো আলোচিত হয়নি।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাফকাত মুনিরের সঞ্চালনায় এই আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির, এবি পার্টির যুগ্ম সচিব দিদারুল আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও সহমুখপাত্র তাহসীন রিয়াজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল।
No comments:
Post a Comment