Showing posts with label স্বাস্থ্য. Show all posts
Showing posts with label স্বাস্থ্য. Show all posts

Sunday, 29 December 2024

২০৩৫ সালের মধ্যে মুটিয়ে যাবে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ









 

২০৩৫ সালের মধ্যে মুটিয়ে যাবে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ। 




যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে সামনের এক যুগে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যায় পড়বে। অর্থাৎ তাদের ওজন হবে উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি। ওয়ার্ল্ড ওবিসিটি ফেডারেশন বলছে২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের চারশ কোটি মানুষ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগবে। সবচেয়ে দ্রুত এই সমস্যা বৃদ্ধি পাবে শিশুদের মধ্যে। বিবিসি জানিয়েছেআফ্রিকা ও এশিয়ার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি এই সমস্যা বাড়ার আভাস দেওয়া হয়েছে

 

ফেডারেশনের এক প্রতিবেদনে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে আর্থিক ক্ষতির হিসাব তুলে ধরে সেখানে বলা হয়েছে২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বে স্থূলতার কারণে প্রতি বছর ৪ হাজার বিলিয়ন ডলারের বেশি অতিরিক্ত খরচ হবে। খবর বিডিনিউজের।

ওয়ার্ল্ড ওবিসিটি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক লুইস বাউর বলছেনতাদের জরিপে যে ফলাফল এসেছেতা বিশ্বের দেশগুলোকে এই সতর্কবার্তা দিচ্ছে যেপরিস্থিতির ওইরকম অবনতি এড়াতে এখনই তাদের উদ্যোগী হওয়া দরকার। ওবিসিটি ফেডারেশনের প্রতিবেদনে শিশু ও কিশোর বয়সীদের মুটিয়ে

যাওয়ার প্রবণতার উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে। বলা হয়েছে২০২০ সালে ছেলেমেয়েদের স্থূলতার যে মাত্রা২০৩৫ সালের মধ্যে তা দ্বিগুণ হতে পারে।

অধ্যাপক বাউর বলেনবিশ্বের জনসংখ্যার স্থূলতার প্রবণতা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। এর পেছনে মূল কারণগুলো পর্যালোচনা করে তরুণদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক খরচ এড়াতে বিশ্বব্যাপী সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের যথাসাধ্য সবকিছু করতে হবে।

বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্থূলতার প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে ওবিসিটি ফেডারেশনের প্রতিবেদনে। বিশ্বে সব থেকে বেশি শারীরিক স্থূলতার ঝুঁকিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে নয়টি দেশই নিম্ন ও মধ্যম আয়েরসবগুলোই হয় এশিয়ারনা হয় আফ্রিকা মহাদেশের।

শারীরিক এই স্থূলতার পেছনে প্রক্রিয়াজাত খাবারশারীরিক ব্যায়াম বা অনুশীলনের অভাবখাদ্য সরবরাহ ও বাজারজাতকরণে দুর্বল নীতি এবং ওজন ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য শিক্ষার অনুন্নত ব্যবস্থাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছেমুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধে নিম্ন আয়ের দেশগুলো খুব বেশি উদ্যোগ নিতে পারে না।

ওবিসিটি ফেডারেশনের তথ্য বলছেবিশ্বজুড়ে স্থূলতার হার বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে। বার্ষিক ক্ষতির যে পরিমাণের অনুমান করা হচ্ছে তা বিশ্বের মোট জিডিপির ৩ শতাংশ এবং একে কোভিডের প্রভাবে ২০২০ সালের আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে তুলনা করেছে সংস্থাটি। তবে শারীরিক

স্থূলতার জন্য কোনোভাবেই মুটিয়ে যাওয়া মানুষদের দোষারোপ না করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। সোমবার জাতিসংঘে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে সংস্থাটি।

ওবিস’ একটি মেডিকেল টার্মযা দিয়ে শরীরের উচ্চ মাত্রায় চর্বি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়। মানুষের শারীরিক স্থূলতা পরিমাপে বডি ম্যাস ইনডেস্ক (বিএমআইব্যবহার করেছে ওবিসিটি ফেডারেশন। একজন প্রাপ্তবয়স্কের শারীরিক ওজনকে তার উচ্চতা দিয়ে ভাগ করে বিএমআই হিসাব করা হয়

ডেঙ্গু সচেতনতা ও করণীয়


 ডেঙ্গু বা ডেঙ্গি এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত বর্ষাকালীন রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে মানবদেহে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। সাধারণ উপসর্গগুলি হলো উচ্চমাত্রার জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি, প্রচ- পেট ব্যথা, ক্রমাগত বমি হওয়া বা নাক ও মুখ থেকে রক্তক্ষরণ, প্রস্রাবে এবং মলের সাথে রক্তপাত, অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ (যা ক্ষতের মতো দেখাতে পারে), দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, ক্লান্তি, বিরক্তি, অস্থিরতা।

শরীরে এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে কালবিলম্ব না করে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু কিছু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর কোনো বিশেষ লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসায় বাড়িতে থেকেই এই রোগের নিরাময় করা সম্ভব। শুধু বিশেষ কিছু ক্ষেত্রেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়।
রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হয় এমনকি স্বাভাবিক কাজকর্মও করা যাবে না। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক রোগীর হাতে ক্যানুলা সংযোগ স্থাপন করতে হবে এবং রোগীর শিরায় প্রায়শঃ স্যালাইন দিতে হবে। প্রয়োজনমতো প্যারাসিটামল ও গ্যাস্ট্রাইটিসের ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। দৈনিক কমপক্ষে ৩ লিটার ওরস্যালাইন মিশ্রিত পানি মুখে খেতে হবে। সাপ্লিমেন্টারি হিসাবে পেঁপে পাতার রস, পাকা পেঁপে, মাল্টার রস, ডাবের পানি, ড্রাগন ফল, লেবুর শরবত প্রচুর পরিমাণে রোগীকে খাওয়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই প্যারাসিটামল ব্যতীত অন্য কোনো ব্যথানাশক ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। ডালিম রক্তে প্লাটিলেটের (ক্লট-তৈরির কোষ) পরিমাণ বাড়ালেও এতে রোগীর পায়খানা শক্ত হয়। রোগীর পায়খানা শক্ত হতে দেওয়া যাবে না। রোগী চাপ দিয়ে পায়খানা করতে চাইলে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগীর বমির ভাব থাকে, জন্ডিস রোগীর মতো সব খাবারে গন্ধ লাগে এবং রোগী বার বার বমি করতে চায়। দিনে তিনবারের বেশী বমি হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক বমির ঔষধ দিতে হবে।
এ সত্ত্বেও রোগীর জ্বর কমতে ৭ দিন সময় লাগবে। তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম দিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দিনে দিনে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে। প্রেসার কমতে পারে। কোনো অবস্থাতেই প্রেসার কমতে দেওয়া যাবে না।
স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্লাটিলেট সংখ্যা হয় ১৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ প্লেটলেট প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের এই সংখ্যা ২০,০০০-এর নিচে চলে যেতে পারে। এই সময় রক্তপাতের ঝুঁকি সর্বোচ্চ হয়। ডেঙ্গুর জীবাণু মানুষের শরীরের রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে রক্তনালীতে ছিদ্র তৈরি হয়। রক্তপ্রবাহে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যেতে থাকে। এর জন্য মানুষের শরীরে শক লাগা, শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তপাত, যেকোনো অঙ্গের ক্ষতি এবং শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। রোগীর লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে, রক্তে এসজিপিটি’র পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
রোগীর শরীরে গুরুতর উপসর্গগুলির কোনো একটি দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে অতি অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই প্লাটিলেট সংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হয়। প্লাটিলেট কাউন্ট কম এবং রক্তক্ষরণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তবেই প্লাটিলেট প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। সংক্রমণ কমার সাথে সাথে রোগীর শরীরে স্বাভাবিকভাবে প্লাটিলেট কাউন্ট বৃদ্ধি পায় এবং এসজিপিটি কমতে শরু করে। এজন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’, ফোলেট এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। সাত দিন পর জ্বর কমতে শুরু করে।
ডেঙ্গু জ্বর কমে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় আসল বিপর্যয়। এটাকে বলা হয় ক্রিটিক্যাল দশা বা সংকটকাল। জ্বর কমে যাওয়ার পর পরবর্তী তিন দিন খুবই সতর্ক থাকতে হবে। এ সময়ে ডেঙ্গুজনিত রক্তক্ষরণ, প্রেসার কমে যাওয়া, চুলকানি, শরীরে র‌্যাশ দেখা দেওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সাধারণত এই সমস্যাগুলো তিন থেকে চার দিন পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যেতে থাকে। স্যালাইন দেওয়ার জন্য ক্যানুলা সংযোগ বিচ্ছিন্নকালেও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর একটি সাধারণ রোগ কিন্তু অবহেলা করলে এই রোগ মারাত্মক হতে পারে। শহরাঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি। তাই নগরবাসীকে আরেকটু সজাগ ও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে যাদের ডেঙ্গু হয়েছে তাদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। দ্বিতীয় ডেঙ্গু সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে।

Search This Blog

Powered by Blogger.