Thursday, 1 May 2025

‘বসে থাকলে খাওয়াবে কে, কাজই তো আমাদের দিবস’


 কামলাদের আবার কীসের দিবস, একদিন বসে থাকলে সেদিন খাওয়াবে কে?’  কথাগুলো বলে গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে চায়ে চুমুক দিচ্ছিলেন শ্রমিক আনিসুল হক। বাড্ডা এলাকার এই ভ্যানচালক জানেন না আজকের তারিখটা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। তিনি জানেন না, আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। যেদিন তার মতো পরিশ্রমী মানুষের অধিকার ও মর্যাদার প্রতীক হওয়ার কথা।

রাজপথে সরকার ও সংগঠনের ব্যানার-ফেস্টুন, ঘটা করে আলোচনার আয়োজন আর সরকারি ছুটি, সবই চলছে যথারীতি। কিন্তু ঢাকার অলিগলি, নির্মাণাধীন ভবন আর বাজারঘাটে আজও হাজারো শ্রমজীবী মানুষ ছুটছেন দৈনন্দিন রুটিনে, একটুও থেমে নেই তাদের হাত।

‘ছুটি মানে পকেট ফাঁকা’

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় দেখা মেলে লোহার রডভর্তি একটি ভ্যান ঠেলে নিয়ে যাওয়া সগির হোসেন নামের আরেক শ্রমজীবীর। চরম রোদ ও ধুলাবালির মধ্যেও কাজ থামেনি তার। ঘামে ভেজা গায়ে পরনে সাধারণ একটি টি-শার্ট, কাঁধে চাপা ভারী মাল। 

জিজ্ঞেস করতেই ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ভাই, ছুটি রাখলে খাইমু কী দিয়া? অফিস-আদালতের ছুটি থাকলেও আমরা থামলে তো সংসার থেমে যায়।

একই এলাকায় কথা হয় রিকশা চালক বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে। নিজেদের দিবসের দিনে কেন রিকশা চালাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই দিবস সাহেবদের। আমরা তো শুধু কাজ করি আর ঘাম ঝরাই। দিবস দিয়া কি বাজারে চাল পাই?

শুধুমাত্র আনিস, সগির, বাচ্চুরাই নন, তাদের মতো অসংখ্য শ্রমিকদের জীবনেই আজকের শ্রমিক দিবসের কোনও বাস্তব প্রভাব নেই। তাদের ভাষায়, যে দিবসে কাজ থামাই, সে দিনই না খেয়ে থাকতে হয়। কাজই তো আমাদের দিবস।


No comments:

Post a Comment

Search This Blog

Powered by Blogger.